বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:২০ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
বাড়ি ভাড়া এবং শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদে কলাপাড়ায় শিক্ষকদের মানববন্ধন ও সমাবেশ পটুয়াখালীর মাদক ডন আব্বাস ও সোহাগ ডিবির জালে বাউফলে নিখোঁজ রাসেলের তিনদিন পর ম/র/দে/হ উদ্ধার দিনে দুপুরে কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হ/ত্যা/র চেষ্টা বাউফলে এক প্রসূতির জরায়ুর ভিতরে সিজারিয়ান কাচি পাওয়ার অভিযোগ ‘শীগ্রই কলাপাড়ায় যুগ্ম জেলা জজ আদালত স্থাপন করতে হবে’ বিচারপতি জেবিএম হাসান কুয়াকাটায় ২দিন ব্যাপী শিক্ষক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত বরিশালে নারীপক্ষের আয়োজনে তরুণ প্রজন্মের সফলতার গল্প শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত বাউফলে জেলা প্রশাসকের শুভ আগমন উপলক্ষে মতবিনিময় সভা বাউফলে জেলেদের মাঝে (বিজিএফ) এর চাল বিতরণে অনিয়ম স্বল্পমূলে তৈরিকৃত ১৯২ জন জেলেদের মাঝে লাইফবয়া বিতরণ পটুয়াখালী র‍্যাব ক্যাম্পে,ঘুমন্ত অবস্থায়  র‍্যাব সদস্যর মৃ/ত্যু কলাপাড়ায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে ইউএনও’র মত বিনিময় বাউফলে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ স্কুল শিক্ষকসহ আহত-৩ মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫
বরিশালে অর্ধশত নারীরা তৈরি করছেন শটির পালো

বরিশালে অর্ধশত নারীরা তৈরি করছেন শটির পালো

Sharing is caring!

এস এল টি তুহিন : বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার দক্ষিন সাকোকাঠী গ্রামের জেলে পল্লীর অর্ধশত পরিবারের নারীরা তৈরি করছেন শটির পালো। নানা প্রতিকুলতার মাঝেও পালো তৈরীর কাজটিকে টিকিয়ে রেখেছেন তারা।

জানাগেছে, বছরে তারা প্রায় সাত’শ কেজি পালো উৎপাদন করছেন । দিনদিন পালোর চাহিদাও বাড়ছে। তাই পালো নিয়ে তাদের সপ্ন অনেক। কবিরাজি মতে, শিশু থেকে বয়বৃদ্ধদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারি একটি ভেষজ খাবার পালো। মানব দেহের বিভিন্ন জটিল রোগ সারাতে, প্রাচীন কাল থেকে লোকজ চিকিৎসায় শটির পালোর ব্যবহার ছিল গুরত্বপূর্ন। পালো একটি পুষ্টিকর (দেখতে ময়দার গুড়ার ন্যায়) ভেষজ খাবার। সময়ের বিবর্তনে জনস্বাস্থ্যের জন্য উপকারি পালো এখন বিলুপ্ত প্রায়।

খবর নিয়ে জানাগেছে, পালো তৈরির প্রথম কারিগর হলেন, জেলে পল্লীর বাসিন্দা মিনতি রানী দাস (৮০)। তিনিই প্রথম পালো তৈরি করে বাজারে বিক্রি করতেন। তার হাত ধরেই এক এক করে পল্লীর প্রায় ৫০ জন নারী বাড়িতে বসে সংসারের কাজের ফাঁকে শটির পালো তৈরি করছেন। পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ ঘরে বসে বাড়তি আয় করে অভাবের সংসারে একটু আর্থিক যোগানও দিচ্ছেন তারা। শটি প্রাচীনকাল থেকে মানব স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবহৃত একটি ভেষজ উদ্ভিদ।

এ গাছের কন্দ থেকে তৈরি হয় পালো। দেশে এলাকা ভেদে শটি, হডি, সাদা হলুদ, বনফুলসহ বিভিন্ন নামে পরিচিত। মুল্যবান এই ভেষজটি সমতল জমির পাশে কিংবা রাস্তার পাশে কোন পরিচর্যা ছাড়াই জন্মে থাকে। এর কন্দ সংগ্রহ করে পালো তৈরি করা হয়। দক্ষিণ সাকোকাঠী জেলে পল্লীর কনক রানী দাস (৫৫), অঞ্জলী রানী দাস (৬০), জয়ন্তী রানী দাস (৩৫) বলেন, মাঘ-ফাল্গুন মাসে বিভিন্নভাবে শটির কন্দ সংগ্রহ করা হয়।

এরপর ভালোভাবে ধুয়ে পরিস্কার করে ছোট টিনের টুকরা ছিদ্র করে তার উপরে ঘষে কন্দগুলোকে ঘষে কুঁচি কুঁচি করে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয় ১২ ঘন্টা। এরপর ধুয়ে উপর থেকে পানিসহ ময়লা ফেলে দিলে নিচে ময়দার মত পালো জমা হয় এটি একইভাবে ৫/৬ বার ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হয়।

তারা জানান, ১৫ থেকে ২০ কেজি কাঁচা শটির কন্দে এক কেজি খাওয়া উপযোগী পালো তৈরি হয়। সম্পূর্ন হাতে তৈরি এই পালো স্বাভাবিক আবহাওয়ায় ২/৩ বছরেও নষ্ট হয় না।

তাদের উৎপাদিত পালো প্রতি কেজি ৬শ টাকায় বিক্রি হয়। জেলে পল্লীর বাসিন্দা এবং পালো সরবরাহকারী নিতাই দাস (৬০) বলেন, আমাদের জেলে পল্লী এখন পালো পল্লী নামেও অনেকে চিনে। আমরা প্রতি কেজি পালো ৬শ টাকা পাইকারী বিক্রি করি। বাজারে প্রচুর চাহিদা আছে পালোর কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী আমরা সরবরাহ করতে পারছিনা। পালো তৈরি করতে শটির প্রয়োজন, শটি কম হওয়ায় পালোও কম হচ্ছে। বছরের বারো মাস যাতে পালো তৈরি করা যায় সে চেষ্টাও আমরা চালাচ্ছি। বর্তমানে ৩ মাস আমাদের এ পল্লীর প্রতি ঘরেই পালো তৈরি হয়। বাজারে এর অনেক চাহিদা রয়েছে।

পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, শটির পালোর উপকারিতা স্বাস্থ্যের জগতে আলোচিত আকর্ষণীয়। শটির পালোর অন্যতম উপকারিতা হল ক্যান্সার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করা। জয়েন্টগুলোতে প্রদাহ ও ব্যথা দূর করে শরীর থেকে টক্সিন অপসারণ করে, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট বিভিন্ন চর্মরোগের জন্য একটি কার্যকর প্রাকৃতিক প্রতিকার। এটি অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল হিসাবে কাজ করে। পালো সেবনে পাকস্থলীর স্বাস্থ্য ও হজমশক্তি ঠিক রাখে।

এ ছাড়াও ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং এবং অন্যান্য কারণে হজমের সমস্যাগুলি নিরাময়করে। আলসার প্রতিরোধ করতে পারে। শিশুদের জন্যও এটি একটি আদর্শ খাবার।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © crimeseen24.com-2024
Design By MrHostBD